Community Paramedic – Short course
দরিদ্র ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিয়তায় কমিউনিটি প্যারামেডিক কোর্স
কমিউনিটি প্যারামেডিক কি?
২ বছর মেয়াদী কমিউনিটি প্যারামেডিক কোর্স সম্পূর্ণ করার পরে তৃণমূলে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা ও সাধারণ রোগের চিকিৎসা এবং রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষনের পর তাদের সঠিক সময়ে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ রেজিষ্টার্ড চিকিৎসকের কাছে যাওয়া পরামর্শ প্রদান করেন। দরিদ্র ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দোরগড়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা পৌছে দেয়ার জন্যই কমিউনিটি প্যারামেডিকরা নিরলস ভাবে কাজ করে থাকে।
কমিউনিটি প্যারামেডিক কোর্সের লক্ষ্য :
শহর থেকে দুরবর্তী গ্রামাঞ্চল, বন্যাদুর্গত হাওড় অঞ্চল, চরঞ্চল, পাহাড়ী ও মফস্বল এলাকা এছাড়াও গ্রাম, ইউনিয়ন ও থানা পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা পরিচর্যামূলক পরামর্শ ও প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার চাহিদা পূরণ করা।
কমিউনিটি প্যারামেডিক কোর্সের উদ্দেশ্য :
১। স্থানীয় পর্যায়ে গভর্নমেন্ট রেজিস্টার্ড কমিউনিটি প্যারামেডিক কর্মী গড়ে তোলা।
২। তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক কমিউনিটি প্যারামেডিকদের জন্য নির্ধারিত (৬৬টি) ঔষধ তালিকার মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা, স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও নিরাপদ মাতৃত্ব সেবা নিশ্চিত করা।
৩। গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টি সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান, পরিচ্ছন্নতা ও শিশুর যত্ন এবং পরিবার পরিকল্পনা প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ প্রদান করা।
৪। নিরাপদ মাতৃত্ব তথা নরমাল ডেলিভারিতে সহায়তা করা।
৫। তৃণমূলে Malpractice এর হার কমিয়ে আনতে সহায়তা করা।
৬। তৃণমূলে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা ও সাধারণ রোগের চিকিৎসা এবং রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষনের পর তাদের সঠিক সময়ে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ প্রদান করবে।
৭। তৃণমূল থেকে কমিউনিটি প্যারামেডিকের মাধ্যমে রেফারেল সিস্টেম চালু করা।
৮। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে কমিউনিটি প্যারামেডিক চাহিদা প্রদান করা।
৯। প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান।
১০। নিজ উদ্যোগে স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান তৈরী করে, নিজ নিজ কমিউনিটিতে প্রাথমিক চিকিৎসা ও সেবা প্রদানের মাধ্যমে উদ্যোক্তা হয়ে গড়ে তোলা।
শিক্ষাগত যোগ্যতা :
যে কোন সাল যে কোন গ্রুপ এসএসসি পাস। ফলে প্রান্তিক এলাকার, দরিদ্র, নিম্নবিত্ত, উপজাতি থেকে এসএসসি পাস করে ঝড়ে পড়া ছেলে মেয়েরা এ কোর্সে ভর্তি হতে পারে। বন্যাদুর্গত হাওড় অঞ্চল, শহর থেকে দুরবর্তী গ্রামাঞ্চল, চরঞ্চল ও পাহাড়ী এলাকায় জনগোষ্ঠি যাহাদের পক্ষে উচ্চশিক্ষার স্বপ্নের চেয়ে বাস্তব কাজ জরুরী তাহারাই এ সকল স্বল্প মেয়াদী কোর্স করে থাকে। বয়স অনূর্ধ্ব ৩৫ হতে হবে।
কমিউনিটি প্যারামেডিক কোর্স মডিউলে শিক্ষনীয় পাঠ :
১। মৌলিক বিষয় সমুহ: এনাটমি ও ফিজিওলজি, ফার্মাকোলজি, মাইক্রোবায়োলজি, প্যাথলজি, বায়োকেমিস্ট্রি।
২। আচরণ পরিবর্তনে যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি
৩। পরিবার পরিকল্পনা ও জেন্ডার
৪। ক্লিনিক ব্যবস্থাপনা এবং দক্ষতা অর্জন ও চেকলিস্ট
৫। নিরাপদ মাতৃত্ব ও মিডওয়াইফারি
৬। প্রজনন স্বাস্থ্য
৭। সংক্রামক ও নব-আভির্ভুত রোগ সমূহ এবং অসংক্রামক রোগসমূহ
৮। সীমিত নিরাময়মূলক সেবা
৯। শিশু স্বাস্থ্য
১০। স্বাস্থ্য খাতে উদ্যোক্তা সৃষ্টি
১১। ইংরেজি
কর্মসংস্থান :
কমিউনিটি প্যারামেডিক কোর্স সম্পূর্ণকারীদের সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে চাকুরির সুযোগ রয়েছে। কোর্স সম্পূর্ণকারীরা নিজ উদ্দ্যোগে স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান তৈরী করে নিজ নিজ কমিউনিটিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক নির্ধারিত (৬৬টি) ঔষধ তালিকার মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা ও সেবা প্রদান করে উদ্দ্যোক্তা ও স্বাবলম্বী হয়ে উঠার সুযোগ রয়েছে। যার ফলে সরকারী চাকুরীর জন্য অপেক্ষা না করে নিজ উদ্দ্যোগে কিছু করার চেষ্টা করে। যাহা দারিদ্র বিমোচনের ক্ষেত্রে সহযোগীতা করার পাশাপাশি সরকারী চাকুরীতে যোগদানের প্রবণতা হ্রাস করবে। এছাড়াও বেসরকারি পর্যায়ে এনজিও যেমন, (SWISS Contact এর আস্থা প্রকল্প, সূর্যের হাসি, আরবান প্রজেক্টসহ ইত্যাদি) প্রজেক্টের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দোরগড়ায় সেবা দেওয়ার লক্ষে কমিউনিটি প্যারামেডিক পদে চাকুরির সুযোগ রয়েছে।
উপকারভোগীর ক্ষেত্র :
মূলত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে তৃণমূলে দরিদ্র ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিউনিটি প্যারামেডিকরা নিরলস ভাবে কাজ করে থাকে। গ্রাম অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য সেবার নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকার বেশ কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। ২০০৯ সালে প্রনীত কমিউনিটি প্যারামেডিক নীতিমালা এর মধ্য অন্যতম। শহর থেকে দুরবর্তী গ্রামাঞ্চল, সীট মহল, বন্যাদুর্গত হাওড় অঞ্চল, চরঞ্চল, পাহাড়ী ও মফস্বল এলাকায় যেখানে মুল ধারায় সুযোগ সুবিধা পৌছায়নি। সেই সকল এলাকার গ্রামীণ মানুষদের কমিউনিটি প্যারামেডিকরা প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান, গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টি সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান, পরিচ্ছন্নতা ও শিশুর যতœ সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান করে থাকে। এছাড়ও পরিবার পরিকল্পনাসহ প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক অন্যান্য বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করেন ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার চাহিদা পূরণ হয়।
কমিউনিটি প্যারামেডিক কোর্স সম্পন্নকারীদের জন্য সরকারী নির্দেশনা :
কমিউনিটি প্যারামেডিক কোর্স সম্পন্নকারীগন যাহাতে সরকারী নির্দেশনার বাইরে গিয়ে কোন ধরনের অনৈতিক কাজে নিজেকে জড়াতে না পারেন সে জন্য সরকার স্মারক নং পপঅ/এমসিআরএইচ/আস্থা প্রকল্প/৩৫/২০১৬/৪২৭, তারিখ: ২০/০৪/২০১৬নং পত্র জারি করেন। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর স্মারক নং- স্বা:অধি/এমএনসিএন্ডএইচ/২০১৬/১৩৫৬, তারিখ- ২১/০৮/২০১৬ জারি করেন এবং এর সাথে রিপোটিং ফরমেট যুক্ত করে দেন।
কমিউনিটি প্যারামেডিক কোর্স সম্পন্নকারীদের স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম মনিটরিং পত্র ও মাসিক প্রতিবেদন।
* মাঠ পর্যায়ে পরিচালিত কমিউনিটি প্যারামেডিকদের সফলতা :
কোর্স সম্পূর্ণকারীদের মাঠ পর্যায়ের সফলতা পর্যবেক্ষন পূর্বক সরকার কমিউনিটি প্যারামেডিকদেরকে DGHS/PHC/CP/2020/8/3 তারিখঃ ১২/১১/২০২০ইং স্মারক মূলে তৃণমূলে বিভিন্ন পর্যায়ের ৬৬টি প্রাথমিক ঔষধ প্রেসক্রিপশন করার ক্ষমতা অর্পন করিয়াছেন। যা কমিউনিটি প্যারামেডিকদের দক্ষতার স্বীকৃতি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক ৬৬টি ঔষধ পত্র নির্দেশিকা।
কমিউনিটি প্যারামেডিক কোর্স আউট লাইন।
বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল কর্তৃক ইস্যু কর্তৃক সনদ।